করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সার্জিকাল মাস্ক কি আসলেই কার্যকর?

23
Photo by Polina Tankilevitch from Pexels

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সার্জিকাল মাস্কের ব্যবহার বিশ্বজুড়ে প্রচলিত। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আসলেই কি মাস্ক ব্যবহার করে কোন লাভ আছে? নাকি শুধু শুধুই কষ্ট করা আর অর্থের অপচয়? আসুন জেনে নিই বিশেষজ্ঞগণ কি বলেন।

মাস্ক কার্যকর কিনা তা জানার আগে জানা দরকার, কিভাবে এই ভাইরাস ছড়ায়? হাঁচি-কাশির ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে করোনা ভাইরাস মূলত ছড়ায় পানির ক্ষুদ্র বিন্দুর আকারে। এই ভাইরাস সমৃদ্ধ পানির ক্ষুদ্র বিন্দু গুলি যে স্থানে পড়ে সেখানে ছয় থেকে আট ঘন্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। আর এই সময়ের ভিতর যদি কেউ ওই স্থান স্পর্শ করে আর তারপর হাত না ধুয়ে যদি চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করে তাহলে ওই ব্যক্তির ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে কোন রোগীর হাঁচি বা কাশির সময় পাশে থাকা ব্যক্তির শরীরে নিশ্বাসের মাধ্যমেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।

এখন আসা যাক মাস্কের কার্যকারিতার কথা। যেহেতু ভাইরাস চোখের মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করতে পারে তাই আপনি যত ভাল মাস্কই ব্যবহার করুন না কেন আপনার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকেই। তাই করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে মাস্কের ব্যবহারের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো, কোন স্থান স্পর্শ করার পর সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার না করে চোখ, মুখ বা নাক স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকার অভ্যাস করা। তাছাড়া আমরা যেসব সার্জিকাল মাস্ক ব্যবহার করি তা পরিধান করলেও অনেক ফাঁক থেকে যায় যেখান দিয়ে অতি সহজেই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে।

Mockup psd created by freepik – www.freepik.com

তাহলে মাস্ক ব্যবহার করে কি কোন লাভ নেই বা মাস্ক ব্যবহারের দরকারই নেই? আসলে, মাস্ক যদিও আপনাকে করোনা ভাইরাসের হাত থেকে একেবারে সুরক্ষা দিতে পারছে না কিন্তু আপনার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমিয়ে দেয়। দ্যা গার্ডিয়ানের মতে, যারা মাস্ক পড়ে না তাদের থেকে আপনার ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ৫ গুন কম সম্ভাবনা থাকে যদি আপনি মাস্ক ব্যবহার করেন। কিভাবে? আসুন একটু বিস্তারিত জানা যাক।

১। যেহেতু আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির সময় করোনা ভাইরাস পানির ক্ষুদ্র কণার সাথে বেরিয়ে আসে সেহেতু আপনি ওই সময় রোগীর কাছাকাছি থাকলেও আপনার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ ভাইরাসের আকৃতি অতি ক্ষুদ্র হলেও (মাস্ক ভেদ করে চলে যাওয়ার কথা) পানির কণা কিছুটা বড় যা মাস্ক আটকিয়ে দিতে পারে। এর ফলে পানির কণাতে থাকা ভাইরাসও মাস্কে বাধাপ্রাপ্ত হয়।

২। আপনি যদি মাস্ক পড়ে থাকেন তাহলে আপনি মনের অজান্তেও আপনার মুখ বা নাক স্পর্শ করতে পারবেন না কারণ তা মাস্ক দিয়ে ঢাকা থাকবে। তাই আপনি যদি ভাইরাস থাকা কোন স্থান স্পর্শ করেও থাকেন তা আপনার শরীরে প্রবেশ করার পথ পাবে না। তবে চোখে হাত দিলে অবশ্য ভিন্ন কথা।

৩। আক্রান্ত ব্যক্তি যদি মাস্ক ব্যবহার করেন তাহলে তার হাঁচি-কাশির সময় ভাইরাস ছড়াতে পারবেনা। ফলে অন্যরা নিরাপদ থাকবে।

সুতরাং, ফেসমাস্কের ব্যবহার যদিও আমাদের ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার নিশ্চয়তা দিতে পারে না কিন্তু এটা আমাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমিয়ে দেয়। তাই কষ্ট হলেও অন্তত ভিড়ের ভিতর মাস্ক ব্যবহার করা অবশ্যই উচিৎ। আর বার বার হাত ধুয়ার কোন বিকল্প নেই। তাই আসুন আতংকিত না হয়ে নিয়ম মেনে চলি, অযথা ভিড় পরিহার করি আর অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে নিজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করি।

সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।

 

HalchalBD

We are a group of professionals, decided to share our knowledge and interests for your better being.

23 thoughts on “করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সার্জিকাল মাস্ক কি আসলেই কার্যকর?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Next Post

প্রতিদিন সকালে এটি পান করুন আর পেটের মেদকে বিদায় জানান

Tue Mar 10 , 2020
পেটের বাড়তি মেদ কমাতে চায় না এমন কেউ খুজে পাওয়া মুশকিল। আর এই পানীয়টি আপনাকে সেই মেদ কমাতে সাহায্য করবে। এটি যেমন মেদ ঝরাবে তেমনি নানান ধরণের অসুখ-বিসুখের ঝুঁকিও কমাবে। প্রতিদিন সকালে এটি খালিপেটে পান করুন আর দুই সপ্তাহের মধ্যেই ফলাফল দেখুন।   প্রয়োজনীয় উপকরণ- পানি- ২৫০ মিলি. (রুম টেম্পারেচার) […]

You May Like

error: Content is protected !!