করোনা ভাইরাস আতঙ্কের মাঝেও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও সরকারি রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে অনেক জায়গায়ই সাধারণ মানুষ সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে বা রাস্তার চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছে। মনে হয় যেন “কিছুই হবে না” এমন একটা গা ছাড়া ভাব। কিন্তু তারা এমন করে নিজের এবং অন্যদের যে কত বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন তা যদি তারা বুঝতে পারতেন! আমেরিকা পৃথিবীর সবথেকে বড় অর্থনীতির দেশ, সবথেকে ক্ষমতাশালী দেশ হওয়া স্বত্বেও করোনার আক্রমণ ঠেকাতে যেভাবে হিমশিম খাচ্ছে তা যদি তারা জানেন তাহলে হয়তো ওইসব মানুষের বোধোদয় হবে আর এই করোনা ভাইরাসের সত্যিকারের ভয়াবহতার মাত্রা তারা বুঝতে পারবেন।
গত বুধবার আমেরিকায় মাত্র কয়েক ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৪০০০ বেড়ে গেছে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত শুধু আমেরিকায়ই করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২০৩০০০ (দুই লাখ তিন হাজার) এর চেয়েও বেশি এবং করোনার ফলে মৃতের সংখ্যা ছিল কমপক্ষে ৪৪৭৩।
আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন এর পরিচালক বলেছেন, ২৫% করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যাক্তির মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার কোন লক্ষণই নেই। কিন্তু এই লোকগুলোর মাধ্যমে অজান্তেই করোনা ভাইরাস ছড়াচ্ছে। এখন যারা এখনও আক্রান্ত হয়নি তাদেরও কি মাস্ক ব্যবহার করা উচিৎ কিনা তাই ভাববার বিষয়।
এর মধ্যে আইসল্যান্ড থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৫০% আক্রান্ত লোকের কোন ধরণের লক্ষণই ছিল না।
হোয়াইট হাউসের আধিকারিকরা পূর্বাভাস দিয়েছেন যে যদি জনসাধারণ সামাজিক দূরত্বের দিকনির্দেশনাগুলো পুরোপুরি মেনে চলে তারপরও করোনা ভাইরাসের কারণে আরও এক লক্ষেরও বেশি লোক মারা যেতে পারে। হোয়াইট হাউস উদ্ধৃত একটি মডেল থেকে দেখা যায় এপ্রিলের মাঝামাঝি নাগাত ভাইরাসটি সেখানে সবচেয়ে বেশি মারাত্মক হওয়ার আশঙ্কা আছে এবং ধারণা করা হয় তখন প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা ২০০০ জন পর্যন্ত হতে পারে।
হোয়াইট হাউসের স্বাস্থ্য কর্মকতারা বলছেন একমাত্র ভাইরাসের বিস্তার রোধ করতে পারলেই মৃতের সংখ্যা কমানো সম্ভব, তা না হলে মৃতের সংখ্যা লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে।
ডাঃ দেবোরাহ বার্কস, হোয়াইট হাউসের করোনভাইরাস রেসপন্স কো- অরডিনেটর বলেছেন লোকজন সামাজিক দূরত্বের দিকনির্দেশনাগুলো না মানলে পরিস্থিতি অনেক ভয়ঙ্কর হতে পারে এবং মৃতের সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ফেডারাল সরকার এখন পর্যন্ত চব্বিশটারও বেশি রাজ্যে ইতিমধ্যে বাড়িতে থাকার আদেশ জারি করেছে এবং ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সামাজিক দূরত্বে বজায় রাখার নির্দেশনা দিয়েছে।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন করোনাকে হালকা ভাবে নিলে হবে না। এটাকে প্রতিরোধ করতে হবে। তাই নিজেও নিরাপদ থাকুন এবং অন্যকেও নিরাপদ থাকতে সহায়তা করুন।
তথ্যসূত্র- CNN
One thought on “যারা মনে করছেন করোনা ভাইরাসে কিছুই হবে না তাদের জন্য”